ফ্রিল্যান্সিং কি এবং শুরু করার জন্য গাইড লাইন
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার (A to Z)
ফ্রিল্যান্সিং কি ও এ বিষয়ক কয়েকটি ছোট খাট প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমার এই পোস্ট। যে কয়েকটি প্রশ্ন ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে যে কারো মনে উঁকি দিতে পারে।
আজ, ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা (freelancing business) করে অনেকেই ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন। এবং, অনেকেই এতো টাকা ইনকাম করে নিচ্ছেন, যে কোনো ফুল টাইম জব বা চাকরি থেকেও এতো আয় করা সম্ভব নাকিন্তু, ফ্রিল্যান্সিং করে স্বাধীন ভাবে আয করার জন্য, আপনার প্রথমে কিছু জরুরি কথা এর বিষয়ে জেনেনিতে হবে।এই জরুরি বিষয় গুলি হল –
- ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?
- ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে কি কি কাজ করা যায়?
- আমি কোন কাজ পারি না, আমি কিভাবে freelancing করব?
- ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আমার কোন আইডিয়া নেই। আমি কি করব?
- আমার কি কি শিখা উচিত?
- আমি কোন সাইটে কাজ করা শুরু করব?
- আমি কিভাবে freelancing শুরু করব।
- আমি মোটামুটি কাজ পারি, কিন্তু কি করব বুঝতে পারছি না।
- আমি কাজ পারি, বিড করে যাচ্ছি কিন্তু কাজ পাচ্ছি না।
- কভার লেটার লেখার নিয়ম
- টাকা কিভাবে পাবো?
ফ্রিল্যান্সিং কি ? (What Is Freelancing In Bangla)
সোজা ভাবে বললে, ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি আলাদা মাধ্যম বা উপায়, যার দ্বারা আপনারা অনলাইন কাজ করে টাকা আয় করতে পারবেন। এমনিতে, একটি চাকরি (job) করা ব্যক্তিকে সকাল ১০ থেকে বিকেল ৬ অব্দি অফিসে গিয়ে এক ধরণের কাজ করতেই হবকিন্তু, freelancing এর মাধ্যমে কাজ করা লোকেরা স্বনির্ভর (self-employed) থাকেন। তাই, ফ্রিল্যান্সিং এর মানেই হলো স্বাধীন ভাবে কাজ করা বা মুক্তপেশা। এটাও এক ধরণের ব্যবসা বললে আমি ভুল হবোনা।
এই প্রক্রিয়াতে লোকেরা, অনলাইন বিভিন্ন সূত্রের (sources) মাধ্যমে কাজ খুঁজে নিজের ইচ্ছে হিসেবে কাজ করেন। এক্ষেত্রে, যারা এভাবে স্বাধীন হয়ে freelancing এর কাজ করেন, তাদের “freelanc” বলা হয়।
স্বল্প সময়ের জন্য চুক্তি করে যেকোনোকাজ করে দেওয়া হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। এই চুক্তি হতে পারে ঘণ্টা ভিত্তিক, দিন ভিত্তিক, মাস ভিত্তিক অথবা প্রজেক্ট ভিত্তিক। বাসায় কোন সমস্যা হলে আমরা যে মিস্ত্রি ডেকে আনি, তারাও ফ্রিল্যান্সার। স্বল্প সময়ের জন্য যে আইনজীবীকে হায়ার করি, তারাও ফ্রিল্যান্সার। তাদের এই কাজগুলোকেও ফ্রিল্যান্সিং বলা যায়। সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং বলতে কোন একটা কোম্পানি বা কোন একজন ব্যক্তির অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করাকে বুঝায়।
তবে আমরা বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে কোন প্রজেক্ট কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে বুঝে থাকি। বর্তমানে বলা যায় প্রায় সব ধরনের কাজই কম্পিউটারের মাধ্যমে করা যায়। যেমন সফটওয়ার বা ওয়েব ডেভেলপেমেন্ট, ডিজাইনিং, মার্কেটিং, লেখালেখি, কনসালটেন্সিসহ হাজার রকমের কাজ রয়েছে, যেগুলো অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন যে, আপনি কতটা সময় কাজ করতে চান, কতটুকু কাজ করতে চান এবং এই কাজ আপনি পার্ট টাইম (part-time) করবেন না ফুল টাইম (full-time).তাছাড়া, ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নেয়া কাজ গুলি করার জন্য আপনার কোনো বিশেষ জায়গার প্রয়োজন হবেনা। কারণ, প্রায় সব ধরণের কাজ করার জন্য আপনার কেবল একটি ল্যাপটপ (laptop) বা কম্পিউটারের (computer) এবং তার সাথে ইন্টারনেট কানেক্শনের প্রয়োজন।
তাই, সবটাই আপনি নিজের ঘরে বসে বসেই করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কে আমরা একটি বিসনেস (business) হিসেবেও নিয়ে কাজ করতে পারি।
ফ্রিল্যান্সিং কেন করব।
আপনার যদি স্বাধীনতা পছন্দ হয়, নিজ বাসায় বা যে কোন স্থান থেকে কাজ করতে ভালো লাগে, তাহলে freelancing করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন, তা নিয়ে বিস্তারিত একটি লেখা লিখেছি। চাকরি করা ছাড়াও সুন্দর আয় করা, স্বাধীন জীবন এবং অন্যান্য।
ফ্রিল্যান্সাররা কেমন আয় করে
একজন ফ্রিল্যান্সার কেমন আয় করতে পারে, তা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। যেমন স্কিল সেট, এক্সপেরিয়েন্স, কত সময় কাজ করছে ইত্যাদি। যেমন একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর থেকে একজন অনলাইন মার্কেটার বেশি আয় করবে। এটাই স্বাভাবিক। কারণ ডেটা এন্ট্রি অপারেটর থেকে একজন অনলাইন মার্কেটারের স্কিল সেট বেশি ও মূল্যবান।
আপওয়ার্কে বিভিন্ন ক্যাটেগরি অনুযায়ী একজন ফ্রিল্যান্সার এভারেজ কেমন ইনকাম করে, তা দেখলে আমরা একটা আইডিয়া পেতে পারি।
- লেখক: একজন লেখক প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 30-40 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক প্রায় 42,000 ডলার আয় করে থাকেন।
- এডিটর: একজন এডিটর প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 25-35 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক প্রায় 40,000 ডলার আয় করে থাকেন।
- প্রোগ্রামার: একজন প্রোগ্রামার প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 60-70 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক প্রায় 120,000 ডলার আয় করে থাকেন।
- ডেভেলপার (সফটওয়ার, মোবাইল, ওয়েব): একজন ডেভেলপার প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 50-60 ডলার আয় করেন। বছরে প্রায় 100,000 ডলার আয় করে থাকেন।
- গ্রাফিক্স ডিজাইনার: একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 40-45 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক প্রায় 90,000 ডলার আয় করেন।
- অনলাইন মার্কেটার: একজন অনলাইন মার্কেটার প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 50-60 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক প্রায় 100,000 ডলার আয় করেন।
- ফটোগ্রাফার: একজন ফটোগ্রাফার প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 35-45 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক প্রায় 42,000 ডলার আয় করেন।
- CRM ম্যানেজার: একজন CRM ম্যানেজার (Customer Relations Manager) প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 50-60 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক সাধারণত প্রায় 120,000 ডলার আয় করেন।
- ডেটা এনালিস্ট: একজন ডেটা এনালিস্ট প্রতি ঘণ্টায় এভারেজ 55-65 ডলার আয় করেন। বাৎসরিক সাধারণত প্রায় 100,000 ডলার আয় করেন।
উপরে কয়েকটা কমন স্কিলের আর্নিং সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে। এই ডেটা গুলো আপওয়ার্কের অফিশিয়াল ব্লগ পোস্ট থেকে নেওয়া। এগুলো হচ্ছে এভারেজ ফ্রিল্যান্সারদের তথ্য। কিছু ফ্রিল্যান্সার এর থেকে বেশি আয় করে। আবার কিছু ফ্রিল্যান্সার এর থেকে কম আয় করে। মূল লক্ষ্য ছিল ফ্রিল্যানিং করে কেমন আয় করা যায়, তা দেখানো। আমার ধারণা উপরের ডেটা থেকে অনলাইন আর্নিং সম্পর্কে আপনাদের একটা স্পষ্ট ধারণা হয়েছে।
এবার লিখব ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে কি কি কাজ করা যায় তা নিয়ে।
কম্পিউটারের মাধ্যমে যে কাজগুলো করা যায়, তা যত সহজ হোক বা কঠিন, সবই একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি করতে পারবেন। একদম সহজ থেকে শুরু করিঃ
- ডেটা এন্ট্রি
- কাস্টোমার সাপোর্ট
- ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
- লেখালেখি বা প্রুপ রিডিং
- ট্রান্সলেশন
- ভয়েস দেওয়া এবং এডিটিং
- ভিডিও এডিটিং
- ছবি তোলা বা ছবি এডিটিং
- ডিজাইনিং
- ইউজার ইন্টারফেস এবং ইউজার এক্সপ্রেরিয়েন্স ডিজাইন
- অ্যাকাউন্টিং রিলেটেড যেকোনো কাজ
- মাইক্রোসফট অফিসের যে কোন কাজ
- গেম ডেভেলপমেন্ট
- সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
- ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট
- মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
- যেকোনো প্রোগ্রামিং বা ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত কাজ
- ডেটা এনালাইসিস
- ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন
- মেশিন লার্নিং
- ইন্টিলিজেন্ট সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট সহ আরো অনেক।
নিচে আপওয়ার্কে কি কি জব পাওয়া যায় তার একটা স্কিনসর্ট। ছবির উপর ক্লিক করলে বড় করে দেখা যাবে।
প্রতিটা ক্যাটেগরির মধ্যেই অনেক গুলো সাব ক্যাটেগরি রয়েছে। যেমন Web, Mobile, and Software Development ক্যাটেগরির মধ্যে দেখুন কত ধরনের জব রয়েছেঃ
এগুলো দেখে একটা ধারনা নেওয়া যাবে অনলাইনে কি কি কাজ পাওয়া যায়, কি ধরনের কাজ পাওয়া যায়। আপনি যদি উপরের যে কোন একটি কাজও পারেন, তাহলে আপনি অনলাইনে কাজ করতে পারবেন। যদিও এ গুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের কাজ অনলাইনে রয়েছে। আপনাকে তা খুজে নিতে হবে। আপনি যদি এ কাজ গুলোর একটিও ভালো মত না পারেন, তাহলে আপনার কাছে যে বিষয়টা ভালো লাগে এমন একটা কাজ শিখে নিতে পারেন। তারপর আপনি কাজ শুরু করতে পারেন। কাজ শিখে নিতে বেশি সময় লাগবে না। ভয় পেলে বা শুরু না করলে কিভাবে শিখবেন? আজকের দিনটি আপনার প্রিয় বিষয়টি শেখা শুরু করার জন্য কি একটি ভালো দিন নয়?
আমি কোন কাজ পারি না, আমি কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করব?
কোন কাজ না জানলে শিখে নিন। যে কোন কিছুই শিখতে পারেন। বা উপরের স্কিনশর্ট থেকে দেখে যে সব বিষয় ভালো লাগে, সে গুলো নিয়ে পড়ালেখা করতে পারেন। এ লেখাটি দেখতে পারেনঃ
ইন্টারনেট ব্যবহার করে সহজেই নিজের পছন্দের বিষয় গুলো শিখে নিবেন যেভাবে।
একটা কথা কি, মানুষ যা নিয়ে ঘটাঘাটি করে সে দিকেই এক্সপার্ট হয়। কেউ প্রথম দিন ই সফল হয় না। আপনি যদি আজ থেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন তাহলে আজই না হোক কাল বা এক মাস পর অথবা এক বছর পর এক জন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। আর আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে গিয়ে ধোঁকা খান তাহলে আগামি কাল আপনি ঐসব দিক এড়িয়ে ভালো দিকে যেতে পারবেন। আপনি যদি প্রথাগত চাকরি করতে না চান, তাহলে আজ থেকেই ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানা শুরু করুন। এখানে কাজের অভাব নেই। বিষয়ের ও অভাব নেই। আপনি সহযেই আপনার পছন্দের বিষয় নির্বাচন করে সামনে এগুতে পারবেন। অথবা একটা বিষয় নির্বাচন করলেন। তার পর দেখলেন আপনার ভালো লাগে না, আপনি সহজেই অন্য বিষয়ে পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে একটা বিষয় কে নির্বাচিত করে সামনে এগুলে ভালো। একটা বিষয় নিয়ে যে যত ঘাটবে সে তত ঐ বিষয় নিয়ে দক্ষ হতে পারবে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, আপনি যদি গ্রাফিক্সের কাজ জেনে থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন সব সময় গ্রাফিক্স রিলেটেড কাজ করার জন্য। দক্ষ মানুষের স্থান সব সময়েই উপরের দিকে, এবার তা যে বিষয়েই হোক না কেন। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে এক জন ফ্রিল্যান্সারকে এক সাথে অনেক কিছুর কাজ করতে হয়। সাজতে হয় ওয়ান ম্যান আর্মি। যাই করুন না কেন, আপনার লক্ষ্য কিন্তু স্থির রাখতে হবে।
স্কিল স্কিল!
অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য স্কিলের বিকল্প নেই। ফ্রিল্যান্সিং অন্য সব জবের মতই। আপনার যদি স্কিল না থাকে, কেউ আপনাকে জব দিবে না। তাই সবার আগে স্কিল ডেভেলপমেন্টে সময় দিন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য আমার কি কি শিখা উচিত?
আগে যে কোন একটা বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এরপর? এরপর অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলতে একটু সময় দিতে হবে। ঘাটাঘাটি করতে হবে। যারা অনেক দিন থেকে কাজ করে, তাদের প্রোফাইল দেখতে হবে। তাদের প্রোফাইল দেকে তাদের প্রোফাইলের মত নিজের প্রোফাইল সাজাতে হবে। এবং ইংরেজীতে একটু দক্ষ হতে হবে। এমন না যে ফ্লুয়েন্টলি আপনাকে কথা বলতে হবে বা লিখতে হবে। অন্তত একটি জব পোস্ট পড়ে কি কি করতে বলছে, কি কি করতে হবে এবং ক্লায়েন্টের সাথে কথা বলার মত ইংরেজী জ্ঞান থাকতে হবে।
কোন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজ করা শুরু করব?
আপনি যদি কিছু কাজ জানেন, তাহলে নিচের যেকোন একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলুন। একাউন্ট খুলে ঐ মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আগে ভালো করে জানুন। প্রত্যেকটা মার্কেটপ্লেস এ নিজের প্রোফাইল সাজাতে হয়। প্রোফাইলে নিজে কি কি কাজ পারি তা যুক্ত করতে হয়। নিজে যেটা পারি, সেটা সত্যি পারি কিনা, তা জন্য অনলাইন পরীক্ষা দিতে হয়। এসব করতে পারলে বুঝতে পারবেন আপনি কাজ করার জন্য উপযুক্ত। এরপর কাজ পাওয়ার জন্য, কাজ করার জন্য বিড করতে থাকুন। যে কাজটি পারবেন বলে মনে হয় তাতে বিড করুন। ক্লায়েন্টকে সুন্দর একটা মেসেজ দিন। কাজ পেতে বেশি সময় লাগবে না। আমি এখানে কিছু মার্কেটপ্লেসের লিঙ্ক দিচ্ছি। এর বাহিরে আরো অনেক গুলো মার্কেটপ্লেস রয়েছে।
- https://www.upwork.com/
- http://www.freelancer.com/
- http://www.guru.com/
- http://99designs.com/
- http://fiverr.com/
- http://www.getacoder.com/ ইত্যাদি।
মোটামুটি কাজ পারি, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করব বুঝতে পারছি না।।
কাজের জন্য বিড করুন, নিয়মিত করবেন। যে কাজটা আপনি পারবেন বলে আপনি কনফিডেন্ট। যদি না পারেন, তাহলে বিড করার পূর্বে আগে গুগলে সার্চ করে ঐ কাজটি সম্পর্কে আইডিয়া নিন। আপনি শিখে নিতে পারেন। এভাবে শিখতে শিখতে এক্সপার্ট হয়ে যেতে পারবেন। সুন্দর করে যদি আপনি জবের জন্য এপ্লিকেশন করার সময় মেসেজ দিয়ে থাকেন, কেন আপনি কাজটা করতে চান, কিভাবে আপনি কাজটা সম্পুর্ণ করবেন, তা বুঝিয়ে দিলে একটা না একটা এপলিকেশনের রিপ্লাই পাবেনই। আর রিপ্লাতে সাধারনত জিজ্ঞেস করা হয় কখন কাজটি আপনি শুরু করতে পারবেন, কত দিন সময় লাগবে ইত্যাদি। এগুলো সুন্দর মত বুঝিয়ে দিলে ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিবে।
প্রপোজাল লেটার বা কভার লেটার লেখার নিয়ম
আপনি যদি নিয়মিত বিড করে থাকেন, তারপর ও কোন কাজ না পান তাহলে আপনার কভার লেটার টা একটু অন্যরকম ভাবে লেখার চেষ্টা করুন। ক্লায়নেটের জাগায় আপনাকে চিন্তা করুন। কিভাবে একজন এপ্লাই করলে আপনি তাকে হারায় করতেন। আশাকরি কাজ হবে। সবাই চায় অভিজ্ঞতা। আপনার কভার লেটারে আপনি নিজে শেখার সময় যে কাজ গুলো করেছেন, সেগুলো দিতে পারেন।
কভার লেখার নিয়ম বলতে আসলে কিছু না। বিশাল একটা মেসেজের থেকে সিম্পল, সরাসরি কাজের কথা দিয়ে কভার লেটার লিখলে সহজেই ক্লায়েন্টের আকর্ষন পাওয়া যায়। জব পোস্টটি পড়বেন, এরপর ক্লায়েন্ট কি কোন প্রশ্ন করেছে কিনা, সে গুলো কভার লেটারে উল্ল্যেখ করবেন। আপনার কোন প্রশ্ন আছে কিনা, সে প্রশ্ন করবেন। আপনি কিভাবে কাজটি সম্পুর্ণ করবেন তা লিখবেন। কেন আপনি জবটি কমপ্লিট করতে পারবেন, তা লিখবেন। এভাবেই পারফেক্ট কভার লেটার লিখে ফেলতে পারবেন।। অন্য কাউকে ফলো না করে নিজের মনের থেকে যেটা লিখতে ইচ্ছে করবে তাই লিখবেন কভার লেটারে।
কাজ না করলে অভিজ্ঞতা কিভাবে হবে তাই না? যদি প্রথমে কেউই কাজ দিতে না চায়, তাহলে ফ্রী কাজ করার চেষ্টা করুন। নিচের লেখাটা দয়া করে পড়ুন।
ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা কিভাবে পাবো?
আশা করি আপনি কাজ পাবেন। যদি কাজ না পান, তাহলে হতাশ হবে না। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন নিয়মিত। কাজ পান নাই বলে বসে থাকার কোন মানে হয় না। আর কাজ পেলে কাজ কমপ্লিট করার পর আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে। বাংলাদেশে এখন অনেক ভাবেই বৈধ ভাবে ফ্রিল্যান্সারদের ইনকামের টাকা আনা যায়। বড় বড় সাইট গুলো থেকে সরাসরি ব্যাংকে টাকা আনা যায়। এ ছাড়া রয়েছে পেওনিয়ার, ওয়াইজ ইত্যাদি। এসব ব্যবহার করেও আপনি সরাসরি টাকা আনতে পারবেন। ফ্রিল্যান্স ওয়েব সাইট গুলো থেকে থেকে আপনি ব্যাঙ্কে ট্রন্সফার করতে পারবেন। আপওয়ার্ক, ইল্যান্স ইত্যাদি ব্যাঙ্ক সাফোর্ট করে। অন্যান্য মার্কেটপ্লেস থেকে আপনি ওয়াইজ, পেওনিয়ার বা এমন কোন সিস্টেমে টাকা আনতে পারবেন। টাকা রুজি করলে দেখবেন হাতে আসার অনেক গুলো পথ পেয়ে যাবেন। কিভাবে টাকা হাতে পাবেন, সে চিন্তা আপাতত না করলেও হবে। সবার আগে কিভাবে একটি জব কমপ্লিট করতে পারবেন, তা নিয়ে কাজ করতে থাকুন। কাজ কমপ্লিট করার পর টাকা ক্লায়েন্ট রিলিজ দেওয়ার পর আপনার মার্কেটপ্লেসের একাউণ্টে জমা হবে। এবং ঐখান থেকে সহজেই অনেক গুলো পথে আপনার নিজের হাতে টাকা নিয়ে আসতে পারবেন। পেপাল নেই, বা আপনার কার্ড নেই, এসব নিয়ে এখন চিন্তা না করলে হবে। এবং এসব নেই বলে কাজ করা বন্ধ করার কোন মানে হয় না।
টাকা হাতে আনার জন্য আপনি মাস্টারকার্ডও ব্যবহার করতে পারেন। আপনাকে কার্ড দিবে। আপনি আপওয়ার্ক বা ফ্রিল্যান্সার থেকে কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। এবং বাংলাদেশের যে কোন এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারবেন। কার্ডের জন্য ফ্রী আবেদন করার জন্য পেওনিয়ারের সাইটে গিয়ে সাইন আপ করুন। নাম, ঠিকানা, ইমেইল, ইত্যাদি দেওয়ার সম একটু নির্ভুল ভাবে দেওয়ার চেষ্টা করুন। এর পর আপনার ঠিকানায় কার্ড চলে আসবে। ফ্রি কার্ড। পরে যে কোন সময় কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করে একটিভ করতে পারবেন। আর একটিভ করার পর আপনি যে কোন মার্কেটপ্লেসে কার্ড যুক্ত করে কার্ডে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।
টাকা কি সত্যিই পাবো?
জ্বি, যে কোন কাজ সম্পুর্ণ করলে সত্যিই টাকা পাবেন।
দোয়া করি আপনার ফ্রিল্যান্সিং জীবন অনেক সুন্দর হোক।
ধন্যবাদ সবাইকে।
মো: মোজাম্মল হোসেন